এবিএনএ: ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় মণিপুর রাজ্যে শান্তি ফিরছেই না। ফের নতুন সংঘর্ষে উত্তাল রাজ্যটি। গতকাল শুক্রবার রাতে রাজ্যের পশ্চিম ইম্ফালে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। খবর টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি পাঁচজন সশস্ত্র যুবকের গ্রেপ্তারির পর থেকে উত্তপ্ত মণিপুর। আটকদের মুক্তির দাবিতে গত চার-পাঁচ দিন রাজ্যটিতে বিক্ষোভ-প্রতিবাদের আগুন জ্বলছে।
সূত্রের খবর, আটককৃত যুবকদের জামিন দেওয়া হলেও ফের তাদের মধ্যে একজনকে হেফাজতে নেওয়া হয়। এরপর থেকেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন ওই অঞ্চলের মানুষ। তবে ওই যুবককে ফের আটক করা নিয়ে দেশটির কর্মকর্তারা মুখ খুলেনি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, পুলিশ বিক্ষোভকারীদের দমনে লাঠিচার্জ ও টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করেছে। এতে অনেকে আহত হয়েছেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মণিপুরের সংখ্যাগুরু সম্প্রদায় হিন্দু মেইতেই জনগোষ্ঠীর। এদের অনেকেই বৈষ্ণব। রাজ্যের জনসংখ্যার প্রায় ৬৫ শতাংশ তারাই। অন্যদিকে পাহাড়ি অঞ্চলে বাস করেন যেসব নাগা এবং কুকি উপজাতির মানুষ, তাদের একটা বড় অংশ খ্রিস্টান। এরকম ৩৩ টি উপজাতি গোষ্ঠীর বসবাস রাজ্যের ৯০ শতাংশ পাহাড়ি অঞ্চলে। গত কয়েক বছর ধরেই মেইতেইরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন যে তাদের তপশিলি উপজাতি (এসটি) হিসেবে শ্রেণীভুক্ত করার জন্য।
ভারতে যে সব সম্প্রদায় ঐতিহাসিকভাবে সমান সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে- তাদেরকে এসটি শ্রেণীভুক্ত করে তাদের জন্য সরকারি চাকরি, কলেজে ভর্তি ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির আসন সংরক্ষণ করা হয়। এরপর মে মাসে মণিপুর হাই কোর্ট রাজ্য সরকারকে মেইতেই সম্প্রদায়ের দাবি বিবেচনার নির্দেশ দেয়। কিন্তু রাজ্যের অন্য উপজাতিগুলোর মধ্যে এতে উদ্বেগ সৃষ্টি হয় যে মেইতেইদেরকে এসটি মর্যাদা দেওয়া হলে তাদের চাকরির জন্য তীব্র প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হবে। এর পরেই সেখানে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। আর তা এখনো চলছে।